ফাস্টফুড তথ্যের ভোজন থামান, বিশ্বকে জানার এটাই প্রকৃত উপায়

নিবন্ধ শেয়ার করুন
আনুমানিক পড়ার সময় ৫-৮ মিনিট

ফাস্টফুড তথ্যের ভোজন থামান, বিশ্বকে জানার এটাই প্রকৃত উপায়

আপনিও কি আমার মতো প্রতিদিন মোবাইল স্ক্রল করতে করতে মনে করেন যেন পুরো বিশ্বটাই দেখে ফেলেছেন, অথচ কিছুই মনে রাখতে পারেননি?

আমরা ফাস্টফুডের মতো তথ্য গ্রহণ করি: আজ 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলোচিত বিষয়' এক ডোজ, কাল 'জাপানের মজাদার তথ্য' এক ডোজ, আর পরশু 'ইউরোপ ভ্রমণ টিপস' এক ডোজ। আমরা দ্রুত গিলে ফেলি, কিন্তু কোনো স্বাদ পাই না। তথ্য আমাদের মস্তিষ্কে শুধু ভেসে যায়, রেখে যায় অস্পষ্ট ধারণা আর এক ধরনের অস্বস্তিকর শূন্যতা।

আমরা মনে করি আমরা বিশ্বকে আলিঙ্গন করছি, কিন্তু আসলে একগাদা ফাস্টফুড জ্ঞান জমা করছি মাত্র।

'তথ্যের খাদক' থেকে 'বিশ্ব শেফ'

আমি একসময় ভাবতাম, বিশ্বকে জানা মানে হলো বিভিন্ন দেশের রাজধানী, বৈশিষ্ট্য আর সাংস্কৃতিক চিহ্নগুলো মনে রাখা। যতক্ষণ না একদিন আমি একটি কাজ পেলাম: 'বাংলা ভাষা' নিয়ে একটি মজার পরিচিতি লেখা।

তখন আমার মাথা পুরোপুরি খালি হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশ? সেটা আবার কী?

এই অনুভূতিটা এমন যেন একজন লোক যে শুধু খাবার অর্ডার করতে জানে, হঠাৎ তাকে রান্নাঘরে ফেলে দেওয়া হলো, সামনে রাখা আছে আগে কখনো দেখেনি এমন একগাদা মশলা, আর তাকে বলা হলো একটি মিশেলিন-স্তরের সুস্বাদু খাবার বানাতে। আতঙ্ক, অসহায়ত্ব, এমনকি একটু হাল ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছাও হলো।

কাজটি শেষ করার জন্য আমি বাধ্য হয়ে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়লাম, একজন শিক্ষানবিশের মতো, একেবারে মৌলিক তথ্য থেকে শুরু করলাম। আমি শুধু লেখা পড়িনি, তাদের গান শুনেছি, তাদের সিনেমা দেখেছি, তাদের ইতিহাস ও রীতিনীতি সম্পর্কে জেনেছি। আমি আবিষ্কার করলাম যে এই ভাষার পেছনে রয়েছে একটি জাতি, যারা কবিতা, রঙ এবং সহনশীলতার গল্পে ভরপুর।

যখন আমি শেষ পর্যন্ত সেই লেখাটি লিখলাম, আমার মনে হলো আমি আর একজন দর্শক নই। আমার মনে হচ্ছিলো যেন আমি নিজের হাতে একটি খাবার তৈরি করেছি, উপাদান নির্বাচন থেকে শুরু করে সেগুলোর উৎস জানা পর্যন্ত, এবং তারপর মনোযোগ দিয়ে রান্না করা। এই 'বাংলা খাবার' শুধু আমার মস্তিষ্ককে তৃপ্ত করেনি, আমার আত্মাকেও পুষ্টি দিয়েছে।

সেই মুহূর্তে আমি বুঝলাম: প্রকৃত সংযোগ তথ্য গ্রহণ থেকে আসে না, বরং উপলব্ধি তৈরি করা থেকে আসে।

আমরা কেবল 'তথ্যের খাদক' হয়ে থাকতে পারি না, অন্যের তৈরি করা ফাস্টফুড জ্ঞানে সন্তুষ্ট থাকতে পারি না। আমাদের 'বিশ্ব শেফ' হতে হবে, নিজের হাতে অন্বেষণ করতে হবে, অনুভব করতে হবে, এবং নিজের মতো করে উপলব্ধি তৈরি করতে হবে।

আপনার বিশ্ব কেবল শোনা কথায় সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়

যখন আপনার কাজ আপনাকে এমন সব দেশ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ক্রমাগত পরিচিত করাতে বলে যা আপনি আগে কখনো শোনেননি, তখন আপনি দেখবেন যে ইংরেজিই আপনার একমাত্র জীবনরক্ষাকারী ভেলা। কিন্তু তা সত্ত্বেও, দ্বিতীয় হাতের তথ্যের মাধ্যমে কোনো স্থানকে বোঝাটা সবসময়ই যেন একটি কাচের দেয়ালের ওপার থেকে দেখা।

আপনি যা বোঝেন, তা হলো অন্যের চোখে দেখা বিশ্ব।

সবচেয়ে গভীর অন্তর্দৃষ্টি সবসময় আসে সবচেয়ে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে। বই থেকে এক হাজার বার 'ব্রাজিলিয়ানরা খুব আন্তরিক' পড়ার চেয়ে একজন ব্রাজিলিয়ান বন্ধুর সাথে দশ মিনিট কথা বলা অনেক বেশি কার্যকর। তিনি হয়তো আপনাকে বলবেন তাদের এই 'আন্তরিকতা'র মধ্যে কেমন পারিবারিক মূল্যবোধ, জীবন দর্শন, এমনকি কঠিন পরিস্থিতিতেও আশাবাদ লুকিয়ে আছে।

এটাই সেই খাবারের 'গোপন সস', যা আপনি কোনো ভ্রমণ নির্দেশিকা বা বিশ্বকোষে খুঁজে পাবেন না।

এই গভীর সংযোগ বিশ্বকে আপনার দেখার ভঙ্গি সম্পূর্ণ বদলে দেবে। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আর একটি সমতল মানচিত্র থাকবে না, বরং অসংখ্য জীবন্ত গল্পে গঠিত একটি ত্রিমাত্রিক গ্রহ হয়ে উঠবে। আপনি আবিষ্কার করবেন, পৃথিবীতে আপনার মতোই জীবন সম্পর্কে উৎসাহ এবং কৌতূহলে পূর্ণ কত মানুষ আছে।

ভাষাকে বিশ্ব অন্বেষণের দেয়াল হতে দেবেন না

“কিন্তু, আমি তো তাদের ভাষা বলতে পারি না।”

এটা সম্ভবত আমাদের 'বিশ্ব শেফ' হওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। আমরা পৃথিবীর অন্য প্রান্তের মানুষের সাথে জীবন নিয়ে কথা বলতে চাই, কিন্তু ভাষার দেয়াল আমাদের দরজার বাইরে আটকে রাখে।

যদি এমন একটি রান্নাঘর থাকে, যেখানে আপনি সারা বিশ্বের মানুষের সাথে একসাথে চিন্তা 'রান্না' করতে পারবেন, আর ভাষা কোনো সমস্যা হবে না?

এটাই ঠিক Intent এর অস্তিত্বের অর্থ। এটি কেবল একটি চ্যাটিং টুল নয়, বরং বিশ্বের যেকোনো দরজা খোলার একটি চাবি। এতে থাকা বিল্ট-ইন এআই অনুবাদ ফিচার আপনাকে আপনার মাতৃভাষায় যে কারো সাথে অবাধে, গভীরভাবে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে, যেন আপনাদের মধ্যে কোনো বাধা নেই।

Intent-এ, আপনি অনায়াসে একজন কোরিয়ান বন্ধুর সাথে সাম্প্রতিক সিনেমা নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন, একজন মিশরীয় বন্ধুর কাছে পিরামিডের পাশের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে শুনতে পারবেন, অথবা একজন আর্জেন্টাইন বন্ধুর সাথে ফুটবলের প্রতি আপনার ভালোবাসা ভাগ করে নিতে পারবেন। আপনি আর তথ্যের নিষ্ক্রিয় গ্রাহক নন, বরং সংস্কৃতির সক্রিয় আদান-প্রদানকারী।

নিজেরা একবার অভিজ্ঞতা নিতে চান? এখান থেকে আপনার প্রথম সত্যিকারের আন্তর্জাতিক কথোপকথন শুরু করুন: https://intent.app/


তথ্যের ফাস্টফুডে আর সন্তুষ্ট থাকবেন না। এটা সুবিধাজনক, কিন্তু প্রকৃত বৃদ্ধি আর আনন্দ নিয়ে আসতে পারে না।

আজ থেকে একজন 'বিশ্ব শেফ' হওয়ার চেষ্টা করুন। একটি সত্যিকারের কথোপকথন শুরু করুন, একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে জানুন, একটি জীবন্ত সংস্কৃতি অনুভব করুন।

আপনি আবিষ্কার করবেন, যখন আপনি সত্যিকার অর্থে বিশ্বের সাথে সংযুক্ত হতে শুরু করবেন, তখন আপনি কেবল জ্ঞান অর্জন করবেন না, বরং এক অভূতপূর্ব, পরিপূর্ণ ও গভীর সুখ অনুভব করবেন।